সাকিল আল ফারুকী 

সমাজ পরিবর্তনে গণমাধ্যম কর্মীদের ভূমিকা অপরিসীম। প্রশাসন, রাজনৈতিক ব্যক্তি বা অন্য কোনো পেশাজীবী শ্রেণি যতটুকু প্রভাব রাখতে পারে, তার চেয়েও বেশি প্রভাব রাখেন মাঠপর্যায়ের সাংবাদিকরা। সত্য উদঘাটন, অনিয়ম-দুর্নীতি প্রকাশ এবং জনস্বার্থ রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে গিয়েই তারা প্রতিনিয়ত নানা ঝুঁকির মুখে পড়ছেন।

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তথ্য সংগ্রহের সময় মারধর, গুম, খুন, হামলা ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন দেশের অসংখ্য গণমাধ্যম কর্মী। তবুও থেমে নেই তাদের পথচলা। সমাজ, রাষ্ট্র ও মানুষের কল্যাণে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন তারা। কিন্তু বাস্তব চিত্র হলো—এই সংগ্রামী পেশাজীবীরা সমাজে এখনো অবহেলিত, নিরাপত্তাহীন এবং রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত।

মাঠে কাজ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের জন্য নেই কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অনিয়মের বিরুদ্ধে লেখালেখি করলেই অসাধু চক্র বিভিন্ন সময় মিথ্যা মামলা, হামলা বা মব সৃষ্টি করে তাদের হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে। অনেক ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা গুরুতরভাবে আহত হলেও তাদের পাশে দাঁড়ানোর মতো কোনো রাষ্ট্রীয় কাঠামো কার্যকর নয়। মৃত্যুর পরও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদের পরিবারের প্রতি তেমন নজর দেওয়া হয় না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গণমাধ্যম কর্মীরা দেশের গুরুত্বপূর্ণ একটি অগ্রবর্তী শক্তি। তারা দুর্নীতি, বৈষম্য ও অপরাধ দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সেই বিবেচনায় সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং তাদের জন্য রাষ্ট্রীয় সহায়তা বৃদ্ধি করা এখন সময়ের দাবি।

গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, সাংবাদিকদের পেশাগত নিরাপত্তা আইন কার্যকর করা, মাঠপর্যায়ে কাজের সময় সুরক্ষা প্রদান, মিথ্যা মামলা বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা এবং মৃত্যু বা আহত হলে পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান—এসব পদক্ষেপ এখনই নেওয়া দরকার।

তারা আরও বলেন, “গণমাধ্যম কর্মীরা যদি নিরাপদ না হন, সত্য উন্মোচন থেমে যাবে। সমাজ পরিবর্তন থমকে যাবে। তাই রাষ্ট্রকে গণমাধ্যম কর্মীদের নিরাপত্তা নিয়ে এখনই কঠোরভাবে ভাবতে হবে।”